বদলগাছীতে সমন্বিত চাষে লাভবান আব্দুর রউফ

বদলগাছীতে সমন্বিত চাষে লাভবান আব্দুর রউফ,প্রতি বছর একটি ফসলের দিকে না ঝুঁকে চাষিদের মাঝে সমন্বিত চাষাবাদের আগ্রহ বাড়ছে। সমন্বিত চাষাবাদের ফলে চাষিরা সারাবছরই আয় করতে পারছেন। বিভিন্ন ফল ও ফসলের আলাদা দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। নওগাঁয় এখন সারাবছরই বিভিন্ন ফল-ফসলের দেখা মিলছে।জেলার বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুর রউফ। মাধ্যমিক পাসের পর পড়াশোনার গণ্ডি পেরিয়ে কৃষিতে মনোনিবেশ করেন। বাবার সামান্য জমিতে শুরু করেন চাষাবাদ। যেখানে ধান, পাট ও শাক-সবজির আবাদ করতেন।

 

বদলগাছীতে সমন্বিত চাষে লাভবান আব্দুর রউফ

 

গত ৩ বছর ধরে কৃষি অফিসের পরামর্শে ৪ বিঘা জমিতে সমন্বিত চাষাবাদ শুরু করেন। তার বাগানে তাইওয়ানসহ বিভিন্ন জাতের আম, পেয়ারা, বরই, কমলা ও মাল্টাসহ প্রায় ৮-১০ ধরনের ফলের গাছ আছে। এরই মধ্যে বরই থেকে হারভেস্ট করে লাভবান হয়েছেন।এ বছর তিনি নতুন ফসল চিয়া সিড আবাদ করেছেন। উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ উচ্চ ফলনশীল জাতের চিয়া সিড চাষে তাকে উদ্বুদ্ধ করে। তারা নিজ থেকেই যোগাযোগ করে সার্বিক সহযোগিতা করেছে।চাষি আব্দুর রউফ

বলেন, ‘৩ বছর আগে ৪ বিঘা জমিতে সমন্বিত প্রজেক্ট করেছি। আগে ধান, পাট ও শাক-সবজির আবাদ করতাম। উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। চাষাবাদের জন্য ৫০০ গ্রাম বীজ দিয়েছিল। তা দিয়ে ১ বিঘায় আবাদ করা হয়। যা সরিষার মতোই একই সময়ে চাষাবাদ করা যায়। বিঘায় খরচ প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। ফলন প্রায় ১০০ কেজির কথা বলা হয়েছিল। তবে ৮০ কেজি ফলন হলেও লাভ।’তিনি বলেন, ‘মাড়াই করার ধরনটা একটু ঝামেলা। রোদে শুকিয়ে

হাত দিয়ে মাড়াই করতে হয়। মেশিনের সাহায্যে মাড়াই করা হলে বাতাসের সঙ্গে উড়ে যাবে। বাজারে ১ হাজার টাকা কেজি। সে হিসেবে ৮০ কেজির দাম ৮০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা থাকবে। এটি শরীরের জন্য উপকারী। যদি কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, বিশেষ করে বাজারজাত করতে। তাহলে আগামী বছরে আরও বেশি জমিতে চাষাবাদ করবো।’তিনি আরও বলেন, ‘সমন্বিত বাগান করার উদ্দেশ্য হলো, যেখানে সব ধরনের ফল ও ফসল থাকবে। পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

মিটিয়ে বাজারজাত করা হবে। ভালো দাম পাওয়াসহ লাভবান হওয়া যাবে। আমাকে দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হবে।খোজাগাড়ী গ্রামের কৃষক নিজামুল বলেন, ‘আমাদের এলাকায় বা উপজেলায় এটি একটি নতুন জাত। বাজারজাত না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না, এটি কেমন লাভজনক। যদি বাজারজাত ভালো হয়, আমরা চাষাবাদে আগ্রহী হবো। কারণ চাষ করলাম, বাজারজাত করা যাচ্ছে না। তাহলে তো আমাদের লোকসান হবে। বিষয়টি নিয়ে কৃষি অফিস কাজ করলে কৃষকদের জন্যও সুবিধা হবে।’কৃষক

শাহজাহান আলী বলেন, ‘আব্দুর রউফ প্রতিবেশী। তিনি সমন্বিত বাগান করেছেন। সেখানে চিয়া সিড আবাদ করেছে। আগে কখনো এর নাম শুনিনি। খরচ বেশি হলেও সমস্যা নেই। যদি অন্য ফসল থেকে দাম ভালো হয় এবং লাভবান হওয়া যায়। তাহলে আগামীতে এ ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হবো। এরপরই আবার বোরো ধানের আবাদ হবে।’বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান বলেন, ‘রউফ নিজ উদ্যোগে সমন্বিত বাগান গড়ে তুলেছেন। যেখানে অন্য ফল ও ফসলের পাশাপাশি ‘চিয়া

সিড’ আবাদ করেছেন। চিয়া সিড একটি লাভজনক ফসল। একটি ফসল থেকে বিঘায় ৫০ হাজার টাকার বেশি লাভ হয়। তার এ কাজ অব্যাহত থাকলে একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিতি পাবেন। যারা আবাদ করতে চাচ্ছেন, তাদের কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হবে।’

 

বদলগাছীতে সমন্বিত চাষে লাভবান আব্দুর রউফ

আরও পড়ুন:

১ thought on “বদলগাছীতে সমন্বিত চাষে লাভবান আব্দুর রউফ”

Leave a Comment